বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত | বরিশালের দর্শনীয় স্থান এবং খাবার।

Barishal
বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত
বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত এই প্রশ্নের উত্তরে বলবো বরিশাল আমড়ার জন্য বিখ্যাত এছাড়া তার অপরূপ প্রকৃতি, বিখ্যাত ব্যক্তি, আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক স্থানের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য বিখ্যাত।

বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষই জিজ্ঞাসা করে বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত। আপনারা যারা বরিশাল জেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাদের জন্যই মূলত এই পোস্ট।

বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত, বরিশালের নামকরণ, বরিশালের বিখ্যাত ব্যক্তি, বরিশালের বিখ্যাত খাবার, বরিশালের দর্শনীয় স্থান সহ আরো অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তারা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন।

বরিশাল নামকরণের ইতিহাস

বরিশালের পুরাতন নাম চন্দ্রদ্বীপ। এই স্থানটিকে বাকরা বা ইসলামপুরও বলা হত। বাকরা চন্দ্রদ্বীপ নামটি অনেক পুরানো বিদেশী মানচিত্রে বড় অক্ষরে প্রদর্শিত হয়। এই অঞ্চলটি ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাকরা চন্দ্রদ্বীপ নামে পরিচিত ছিল।

১৭৯৭ সালে, ঢাকা জেলার দক্ষিণ অংশের সাথে বাকেরগঞ্জ জেলা তৈরি করা হয়। ১৮০১ সালে, জেলা সদর বাকেরগঞ্জ থেকে বরিশালে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৪ সালে বরিশাল বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে বরিশাল জেলা এই বিভাগের সদর দপ্তর হয়।

বরিশাল জেলা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য

বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত কথাটার উত্তর সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লেই বুঝতে পারবেন।

বরিশাল জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। বরিশালে বাংলাদেশের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক হাব হলো বরিশাল পোর্ট।

এই পোর্টটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক প্রবাহের জন্য একটি মুখোমুখি অবস্থানে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের মূল পোর্ট হিসেবে গুণগত পরিচিত।

বরিশাল জেলার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড দিক থেকে কৃষি বেশ ভুমিকা পালন করে। এখানে ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, গম, পাট, সরিষা, আলু আখ ইত্যাদি।

বরিশাল জেলার মৎস্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে ইলিশ, চিংড়ি, রোই, কাতলা এবং গরু।এছাড়া এ অঞ্চলে চামড়া শিল্প, পাট শিল্প, ওষুধ শিল্প, কৃষি যন্ত্রপাতি শিল্প, ও সিমেন্ট শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পও অনেক প্রসিদ্ধ।

বরিশাল নদী, খাল এবং হ্রদ দ্বারা বেষ্টিত একটি সমতল এলাকা। বরিশাল জেলার প্রধান নদী কীর্তনখোলা। জলভরা ক্ষেত্র, ছোট হাওর, বাগান এবং রঙিন ফুলের উদ্ভাবন বরিশালে প্রকৃতির সৌন্দর্যের একটি অমূল্য অংশ।

বরিশাল জেলার সমৃদ্ধি ও উন্নত শিক্ষার ক্ষেত্রে বরিশাল একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এছাড়া, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে।

বরিশাল জেলার প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য সেবা, এবং নারী ও শিশুর জন্য প্রযুক্তিগত উন্নতির দিকে বেশ উন্নত। বরিশালে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মন্দির, পৌরাণিক এবং প্রাচীন স্মৃতিসৌধ রয়েছে।

বরিশালের সাংস্কৃতিক জীবন আরও একটি আদর্শ দৃষ্টিভঙ্গি। এখানে বহুল লোকসাহিত্য, সংগীত, নৃত্য, এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল বাঙালি ভাষা ও সাহিত্যে একটি গর্ববর্ধন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

বরিশাল জেলার দর্শনীয় স্থান

বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত এই প্রশ্নের পাশা পাশি অনেকে বলে থাকেন বরিশালের দর্শনীয় স্থানের লিস্ট দিতে। চলুন, কিছু দর্শনীয় স্থান দেখে নেয়া যাক।

গুঠিয়া মসজিদ
গুঠিয়া মসজিদ

গুঠিয়া মসজিদ

গুঠিয়া মসজিদ বরিশাল জেলার গুঠিয়ায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম মসজিদ হিসেবে পরিচিত।

গুঠিয়া মসজিদের স্থাপত্য নকশা খুবই সুন্দর। এই মসজিদে মুক্তায় সুপান্ত্য বাণীর নকশা, শিল্পের মাধ্যমে মূল্যবান কাঁচ ও মোটাজ, এবং ভবনের সমতল ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত।

গুঠিয়া মসজিদের মূল স্থাপত্য নকশা ইসলামি আর্কিটেকচারের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় এবং মূল্যবান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এটি আধুনিক ইসলামিক ভবন নির্মাণের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবে পরিচিত।

শাপলা গ্রাম
শাপলা গ্রাম

শাপলা গ্রাম

শাপলা গ্রাম বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের অবস্থিত। এটি একটি প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যবাহী এলাকা।

শাপলা গ্রামের বাসিন্দারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে জীবন যাপন করে। বিলের পানিতে লতা, পাতা গুল্মে ভরা শত শত বিভিন্ন শাপলা হার মানিয়ে দেয় অনেক সৌন্দর্যকে।

শাপলার বিল নামে পরিচিত এ বিলের সাধারণত লাল, সাদা, বেগুনি তিন ধরনের শাপলা ফুটে থাকে। পুরো গ্রাম জুড়ে এই শাপলার চাষ হয়।

শাপলা গ্রাম বর্তমানে পর্যটনের একটি কেন্দ্র। এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, স্থানীয় সংস্কৃতি এবং বাস্তুসংস্কৃতি মানুষকে আকৃষ্ট করে।

দুর্গাসাগর দিঘী
দুর্গাসাগর দিঘী

দুর্গাসাগর দিঘী

দুর্গাসাগর দিঘী বরিশাল জেলায় বাবুগঞ্জের মাধবপাশায় অবস্থিত । এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম দিঘীর মধ্যে একটি হিসেবে পরিচিত।

শিব নারায়ণ জল সংকট সমাধানের জন্য এই দীঘি খনন করেন। মা দুর্গা দেবীর নামানুসারে তিনি দীঘির নাম দেন দুর্গাসাগর দীঘি । বর্তমান জেলা প্রশাসন এই দীঘি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে।

দুর্গাসাগর দিঘী স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রিয় একটি স্থান এবং ভ্রমণকারীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এখানে আপনি সুন্দর সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

এই দীঘির পানি সাধারণত স্বচ্ছ এবং শান্ত। যাতে পর্যটকরা শান্ত ও প্রাকৃতিক পরিবেশে মন খুলে ভ্রমণ করতে পারে। প্রতিবছর অনেক ভ্রমণকারী এখানে আসে।

এই দুর্গাদীঘির চারপাশে নানান ধরনের বৃক্ষ যেমন, নারিকেল, সুপারি, মেহগনি সহ বহু বৃক্ষ রয়েছে এবং প্রায় ছয় প্রজাতির হাজার হাজার পাখির আবাসস্থল রয়েছে।

অক্সফোর্ড মিশন গির্জা
অক্সফোর্ড মিশন গির্জা

অক্সফোর্ড মিশন গির্জা

বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন গির্জা বরিশাল জেলার বরিশাল শহরের একটি প্রাচীন গির্জা। এটি ব্রিটিশ শাসনের সময়ে এবং সুন্দর স্থাপত্য নকশায় নির্মিত।

অক্সফোর্ড মিশন গির্জা বর্তমানে ধারাবাহিক গির্জা সেবা প্রদান করে এবং অনেক স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।

এখানে প্রতিবছর অনেক ভ্রমণকারী আসে এবং এই ঐতিহাসিক গির্জার সুন্দর স্থাপত্য এবং ধার্মিক গুণ অনুভব করে। অক্সফোর্ড মিশন গির্জা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক পরিচয়ের একটি অমূল্য সম্পদ।

এটির ভিতরে ১৩টি পুকুরও রয়েছে। প্রাইমারি স্কুল এবং হাই স্কুল, লাইব্রেরি, ছাত্র ছাত্রী হোস্টেল, হাসপাতাল, ফুলের বাগান, ঔষধি গাছ এবং খেলার মাঠ রয়েছে।

ভিতরে সারি সারি পাম্প ট্রি। অত্যন্ত মনোরম, শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ রয়েছে। গির্জার মধ্যে রয়েছে একটি আকর্ষনীয় একটা ঘন্টা।

শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর

বরিশালের শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘর বাংলাদেশের বিখ্যাত একটি স্থান। বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের বাড়িতে অবস্থিত।

শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘরে রয়েছে প্রদর্শনী কক্ষ এবং অফিস, বিশ্রামাগার, ও একটি গ্রন্থাগার রয়েছে। শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতিময় অবস্থান রয়েছে।

এখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির জন্য নির্মিত স্মারকস্তম্ভ, প্রশাসনিক সাহিত্য, ছবি, প্রতিষ্ঠানের স্মৃতি উপাদান, জলের বুদ্ধিমত্তা, মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামীদের জীবনের চিত্রগুলি ইত্যাদি পাওয়া যায়।

আরও রয়েছে স্বর্ণ ও রৌপ্যর মুদ্রা, সুন্দরবনের শিকার করা কুমিরের মমি, কালো পাথরের শিবলিঙ্গ, বিভিন্ন সুলতানি আমলের মুদ্রা সমূহ এবং বিভিন্ন প্রন্ততান্ত্রিক নিদর্শন।

এই জাদুঘরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সংগ্রামীদের অসম্মানজনক সংগ্রাম, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতিময় অবস্থান অনুভব করা যায়। প্রতিবছর অনেক পর্যটক এখানে আসেন ।

লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বরিশালের লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি একটি ঐতিহাসিক স্থান যা বরিশাল জেলা সদরের কাশিপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। এই বাড়িটি প্রাচীন জমিদার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের নিবাসস্থান ছিল।

লাকুটিয়া জমিদার বাড়িটি একটি প্রাচীন স্থাপত্য কৌশলে নির্মিত সুন্দর ভবন। এই বাড়িটির আকার বড় এবং ভবনটির নির্মাণে একধরনের শৈলী ও কৌশল ব্যবহৃত হয়েছিল।

এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রূপচন্দ্র রায় । পুত্র রাজচন্দ্র রায়ের সময়ে এর প্রতিপত্তি বেড়ে যায়। তারপর তিনি এই লাকুটিয়া জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন।

লাকুটিয়া জমিদার বাড়িটি বর্তমানে পর্যটকের আকর্ষণীয় স্থান। এখানে অনেক প্রাচীন সংগ্রহশালার উপাদান দেখা যায়। প্রতিবছর অনেক পর্যটক এখানে আসে । বর্তমানে বাড়িটি বিএডিসির তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্ক

বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্ক একটি প্রশান্ত ও আকর্ষণীয় পার্ক যা বাংলাদেশের বিখ্যাত মুক্তিযুদ্ধ প্রতীক শেখ মুজিবুর রহমান এর নামে পরিচিত। এটি বরিশাল শহরের ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বরিশাল শহরের উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য ও মুসলিম শিক্ষা বিটসন বেলসের অবদানের কথা অপরিসীম তাই তার নামানুসারে উদ্যানটির নাম রাখা হয় বেলস পার্ক।

বঙ্গবন্ধু উদ্যান বেলস পার্কে প্রতিবছর অনেক ভ্রমণকারী আসেন এবং এই সুন্দর পার্কে সময় কাটান

শংকর মঠ

বরিশালের শংকর মঠ হল একটি প্রাচীন হিন্দু মঠ যা বরিশাল শহরে অবস্থিত। শ্রী শ্রী শংকর মঠ নামের এই আশ্রমটি নেতা স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন।

শংকর মঠের প্রধান মূল ভবন হিন্দু ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়। শংকর মঠে বিভিন্ন ধর্মীয় আচরণ, উৎসব,পূজা, অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা হয়।

এটি হিন্দু ধর্মের পবিত্র স্থান হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ ।প্রতিবছর অনেক পর্যটক এবং ধর্মীয় অনুসারীর আকর্ষণের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটি বর্তমানেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ

বরিশালের মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ হল একটি প্রাচীন মসজিদ। এটি বরিশাল জেলার বরিশাল সদরের উত্তর কড়াপুর গ্রামে অবস্থিত।

মসজিদটি সামনের দিকে চারটে মিনার এবং পিছনের দিকে চারটে মিনার নিয়ে মোট আট টি মিনার নিয়ে গঠিত।

মিয়াবাড়ি জামে মসজিদের স্থাপত্য শৈলী অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং সুন্দর। এটি ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল । মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ একটি পুরাতন এবং ধার্মিক স্থান হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেমন,

বিবির পুকুর।
ভাসমান পেয়ারা বাজার।
গজনির দিঘী।
আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু।
উলানিয়া জমিদার বাড়ি।
কলসকাঠী জমিদার বাড়ি।
কীর্তনখোলা নদী।
দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরের বাড়ি,
কসবা মসজিদ।

বরিশালের বিখ্যাত খাবার

বরিশাল জেলা একটি সৃজনশীল ও রূচিকর খাদ্য সমৃদ্ধির অঞ্চল। এখানে বিশিষ্ট খাবার প্রণালী এবং স্বাদের একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বরিশাল জেলার কিছু বিখ্যাত খাবারগুলি হলো:

বিসকিঃ বিসকি শুধুমাত্র বরিশাল এলাকার বাসিন্দারাই খায়। বরিশালের বাইরে এই খাবারের কথা কেও জানেনই না । চাল ভাজা সারারাত ভিজিয়ে রাখার হয়। পরের দিন সকালে নারকেল এবং গুড় দিয়ে ভেজা চাল পাক দিয়ে খাওয়া হয়।

পিঠাঃ বরিশালে বিভিন্ন প্রকারের পিঠা প্রস্তুত হয়, যেগুলি উৎসবে বা বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি হয়। পাকন পিটা, পাটি শাপ্টা, কাঁচা ইলিশ পিঠা, মুগের পিঠা ইত্যাদি অত্যন্ত জনপ্রিয়।

পাকন পিটাঃ বরিশাল এলাকায় প্রতিটি বিশেষ অনুষ্ঠানে পাকান পিঠা অতিথিদের দিয়ে থাকে। বিয়ে বাড়িতে পিঠা পুলি পাঠানো থেকে শুরু করে প্রায় সব আনুষ্ঠানিকতায় পাকন পিঠা থাকে।

পাটি শাপ্টাঃ পাটি শাপ্টা বা পাটিশাপ্টা বরিশালের একটি পুরানো এবং প্রিয় খাবার। পাটি শাপ্টা ইলিশ মাছের সঙ্গে তৈরি একটি নারিকেল দেওয়া মিশ্রণ এবং শাপ্টা পাতা দিয়ে বানানো হয়।

মলিদাঃ এই মলিদা শুধু বরিশালের মানুষই বেশি খেয়ে থাকে। বিশেষ করে রমজান মাসে ইফতারের মেনুতে থাকে । রোজাদারের সমস্ত ক্লান্তি দূর করতে মলিদার শরবত বরিশালের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং খুবই জনপ্রিয় খাবার।

ইলিশঃ বরিশাল জেলা বাংলাদেশের একটি ইলিশ উৎপাদন কেন্দ্র, এবং ইলিশ ভাত এখানে একটি জনপ্রিয় খাবার। এখানে ইলিশ মাছের সাথে অনেক কিছু সমন্বয় করে পরিবেশন করা হয়, যা এখানের একটি মোহ খাবার।

বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত এই কথা বরিশালের কাউকে বললে অনেকেই বলেন থাকেন বরিশাল ইলিশের জন্য বিখ্যাত।

পানি পুরিঃ বরিশালের লোকসভা ও সোশ্যাল ইভেন্টগুলিতে খোদ তৈরি পানি পুরি অনেকটা বিশেষ। বিভিন্ন স্বাদের পানি পুরি বরিশালে পাওয়া যায়, এবং এটি স্থানীয় লোকের মধ্যে খুব জনপ্রিয়।

কাঁচা আমের চাটনিঃ বরিশালের পৌরাণিক আমের স্বাদ কাঁচা আমের চাটনিতে পৌঁছাতে পারেন। এটি কাঁচা আম, কাঁচা মরিচ, পুদিনা, ধনিয়া, লবণ, এবং বিভিন্ন স্পাইস দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে এবং এটি ভাত বা খিচুড়ির সাথে মিলিয়ে খাওয়া হয়।

মিষ্টি দইঃ বরিশালের গৌরনদীর দই অত্যন্ত জনপ্রিয়।ভাল দই কিনতে হলে অবশ্যই গৌরনদীর দই কিনতে হবে। গৌরনদীর দই মানুষের মুখে নতুন স্বাদ নিয়ে আসে। গৌরনদীর দই প্রতিটা মিষ্টির দোকানেই বিক্রি হয়।

কাজু বাদামঃ বরিশালে তৈরি কাজু বাদাম অত্যন্ত জনপ্রিয়, এবং এটি অসাধারণ স্বাদ ও মধুর খাবার। বরিশালের স্থানীয় কাজু বাদাম খেতে অদ্ভুত ভাল লাগে।

উল্লেখ্যঃ এই তালিকাটি সম্পূর্ণ নয়, বরং বরিশালের কিছু বিখ্যাত খাবার উল্লেখ করা হয়েছে।

বরিশালের বিখ্যাত ব্যক্তির নাম

বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত এটা প্রথমে বলেছি তবে বরিশালের বিখ্যাত ব্যক্তি গুলো বরিশালকে আরো বিখ্যাত করেছে। সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হল।

শের-ই-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, বাংলার প্রধানমন্ত্রী
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর, রাজনীতিবিদ
আলতাফ মাহমুদ, সুরকার
জীবনানন্দ দাশ, কবি
কুসুমকুমারী দাশ, কবি
সুফিয়া কামাল, কবি
আরজ আলী মাতুব্বর, লেখক
আহসান হাবীব, লেখক
হানিফ সংকেত, উপস্থাপক ও বুদ্ধিজীবী
নিখিল সেন,একুশে পদকপ্রাপ্ত
জনাব আমির হোসেন আমু, রাজনীতিবিদ
কামাল হোসেন, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ
আব্দুল মালেক উকিল, রাজনীতিবিদ
নুরুল ইসলাম, রাজনীতিবিদ
শওকত ওসমান, সঙ্গীতশিল্পী
রবিন ঘোষ, অভিনেতা
পলাশ, অভিনেতা
স্পর্শিয়া, অভিনেত্রী
রাইসুল ইসলাম আসাদ, অভিনেতা
কাজী আনোয়ার হোসেন, বিজ্ঞানী
মুনীর চৌধুরী, বিজ্ঞানী

এছাড়াও আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি বরিশালের জন্মগ্রহণ করেছেন।
উল্লেখ্য: এই তালিকা সম্পূর্ণ নয়, বরং বরিশালের কিছু ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

আরো পরুনঃ 👉👉👉 ফোনের ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার উপায়

FAQ (বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত)

বরিশালের অপর নাম কি?

বরিশাল জেলার অপর নাম চন্দ্রদ্বীপ, বাকলা থেকে বাকেরগঞ্জ এবং ইসলামপুরও বলা হত।

বরিশাল জেলার জনসংখ্যা কত?

বরিশাল জেলার মোট জনসংখ্যা ২৩, ২৪,৩১০ জন (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)

বরিশাল জেলার আয়তন কত?

বরিশাল জেলার আয়তন হচ্ছে প্রায় ৪,৩০০ বর্গমাইল।

বরিশাল জেলা কোন নদীর তীরে অবস্থিত?

বরিশাল জেলা কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত

বরিশাল জেলার গ্রাম কয়টি?

বরিশাল জেলা প্রায় ১১৭৫ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।

বরিশাল জেলায় কয়টি থানা?

বরিশাল জেলায় ১৪টি থানা রয়েছে।

বরিশাল জেলার উপজেলা কয়টি?

বরিশাল জেলায় ১০ টি উপজেলা রয়েছে।

বরিশাল জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা কোনটি?

সবচেয়ে বড় উপজেলা হচ্ছে কুলাউড়া। আয়তন হচ্ছে প্রায় ৫৪৫.৭৩ বর্গ কিলোমিটার।

শেষ কথা

আপনারা হয়তো উপরের আর্টিকেল থেকে বুঝতে পেরেছেন বরিশাল কিসের জন্য বিখ্যাত। যদি আপনাদের এই পোস্ট ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন।
Previous Post